অনলাইন ডেস্ক ॥ ২০১৮ সালে আইএমএফের চাকরি ছেড়ে ওয়াশিংটন থেকে দেশে ফেরেন ড. রেজা কিবরিয়া। তাঁর মূল পরিচয় অর্থনীতিবিদ হলেও নির্বাচনের আগের ওই সময়টিতে তিনি গণফোরামে যোগদান করেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া পরে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আলোচনায় আসেন। নির্বাচনের পর গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন। তবে নানা কারণে সম্প্রতি গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এসব বিষয়ের পাশাপাশি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কয়েকটি প্রসঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেক কিছু বলার আছে। আমি বলতেও চাই। সেগুলো বলতে পারিনি। এ ছাড়া দলের ভেতরকার কিছু লোকের ব্যক্তিগত বিষয় ছিল। যেগুলো রেষারেষি হওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু এসবের মধ্যে আমি যুক্ত হতে চাই না। গণফোরাম আমাকে চায়। কিন্তু ওই দলের মধ্যেই ছোট দল বড় দল নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছে। তা ছাড়া দলের কেউ কেউ আমার অপছন্দের ব্যক্তি। আমি তাদের সঙ্গে রাজনীতি করতে চাই না। এখন বাইরে থেকে এ ব্যাপারে আমি কাজ করতে চাই। ড. কামাল আমাকে অনেক স্নেহ করেন। তা ছাড়া পদে থাকার বিষয়ে অনিচ্ছার কথা কয়েক মাস ধরেই আমি উনাকে বলেছি। তিনি মেনে নিয়েছেন। উনার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার জীবনের অনেক বড় একটি অর্জন। গণফোরামের কোন ক্ষতি হয়েছে, তা আমি মনে করি না। আমি কার নেতৃত্ব মানব সেটাই একটা ব্যাপার আছে। ড. কামাল হোসেনের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে পারাটা অবশ্যই প্রিভিলেজ। তা ছাড়া আর কী করা যেত। আমি চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমত, আমার বাবা যে রাজনীতি করতেন, আর এখনকার আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে দুটি এক নয়। আমার মনে হয়, আমার বাবা বেঁচে থাকলেও এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতেন না। কারণ অনেক কিছু হয়েছে আওয়ামী লীগ যেটি বলে বা বিশ্বাস করে সেখান থেকে তারা সরে এসেছে। তাই বলব, আমি আদর্শ থেকে সরে আসিনি। তবে ওই দলে যেতে চাই না। দ্বিতীয়ত, পারিবারিক রাজনীতির সূত্র ধরে ওই দলে যেতেই হবে—বাংলাদেশের এই কালচার বা স্টাইলের সঙ্গেও অমি একমত নই। দলটিকে এখন আমার আদর্শহীন মনে হয়। এককালে সত্যিই আওয়ামী লীগ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল ছিল। এখন আমার অবাক লাগে, দলের ভেতরে যাঁরা আছেন তাঁরা এই দলের দশা দেখে কিছু বলছেন না কেন। বিএনপি জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বরেন, জামায়াত কার সঙ্গে যায় বা যায় না সেটি নিয়ে অনেক কিছু বলা যায়। ১৯৯০ সালে একই মঞ্চে এখনকার সরকারি দলের অনেককে দেখেছি। কেউ কেউ জামায়াতের সঙ্গে তখন হ্যান্ডসেইক করেছেন। তখন তো গেছে। তার চেয়ে বড় কথা, সরকারবিরোধী শক্তির মধ্যে বিএনপি অবশ্যই বড় ফ্যাক্টর ছিল। অবশ্য গণফোরামে তখন সদ্য যোগ দিয়েছি। ফলে জানা ছিল না যে তারা ধানের শীষে নির্বাচন করবে। শেষ পর্যন্ত দলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত আমাকে মেনে নিতে হয়েছে। তার পিতার হত্যার ব্যাপারে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি এটাও একটা রাগের কারণ। বিএনপির পর আওয়ামী লীগের আরো ১২ বছর কেটে গেল। এতে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগ এই বিচার নিয়ে কতটুকু সিনসিয়ার বা সিরিয়াস। এ ঘটনায় পারিবারিকভাবে আমরা খুবই অসন্তুষ্ট। তারা সুষ্ঠু তদন্ত করতে পারেনি বা চায়নি কেন সেটি খুবই রহস্যময় হয়ে আছে।
Leave a Reply